গত শুক্রবার পৃথিবীর প্রায় ১৫০টি দেশের দুই লক্ষাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই সাইবার হামলায় ওয়ানাক্রাই নামের যে ভাইরাসটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি মূলত একটি ম্যালওয়ার।
ওয়ানাক্রাই কোন কম্পিউটারে সংক্রমণ ঘটালে সেই কম্পিউটারে সংরক্ষিত ডাটা বা তথ্য 'এনক্রিপ্ট' করে ফেলে। কোন ফাইল এনক্রিপ্ট করার অর্থ হচ্ছে সেই ফাইলে তালা মেরে দেয়া। ফাইল এনক্রিপ্ট করে ফেললে ব্যবহারকারী নিজে তার ফাইলে আর প্রবেশাধিকার পায় না। আর এই পদ্ধতিকে বলা হয় র্যানসমওয়্যার। সাম্প্রতিক সাইবার হামলায় কম্পিউটারের ডাটায় প্রবেশাধিকারের বদলে মুক্তিপণ হিসেবে অর্থ দাবি করছে হ্যাকাররা।
ধারণা করা হচ্ছে, 'ওয়ার্ম' বলে পরিচিত এক ধরণের কম্পিউটার ভাইরাসের মাধ্যমে ওয়ানাক্রাই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সফটওয়্যারের বৈশিষ্ট্য হলো, এটি নেটওয়ার্কের ভেতর স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচল করতে পারে। কোন একটি প্রতিষ্ঠানের একটি কম্পিউটারে এই ম্যালওয়ার প্রবেশ করাতে পারলে এরপর নিজে নিজেই এটি প্রতিষ্ঠানটির অরক্ষিত সব কম্পিউটার শনাক্ত করে সেগুলোকেও সংক্রমিত করে।
বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার পাওয়া একটি ভাইরাসের তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছিল এবং ওই ভাইরাসটি কাজে লাগিয়ে এই ম্যালওয়্যারটি বানানো হয়েছে। কিন্তু র্যানসমওয়্যারের এই বিকাশের ফলে প্রযুক্তিবিশ্ব দারুণ এক সংকটের সম্মুখিন হয়েছে। কেননা এভাবে সাইবার হামলা চালানো হলে তা ঠেকানোর কোন পদ্ধতি এখনো বিশ্লেষকরা বের করতে পারেনি।
তাছাড়া র্যানসমওয়্যার উন্নত ও কার্যকর করে তোলার জন্য সাইবার অপরাধীদের মধ্যে চলে এক তীব্র প্রতিযোগিতা। তাই নতুন নতুন অভেদ্য র্যানসমওয়্যার গড়ে তুলবে তারা। এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার দিয়ে এগুলোকে ঠেকানো সম্ভব হলেও শতভাগ নিশ্চিতভাবে কোন পদ্ধতিকেই সুরক্ষিত বলা সম্ভব হবে না।
0 comments: