Wednesday, August 29, 2018

আবিষ্কৃত হলো মেধা বিকাশের কৃত্রিম উপায়

হলিউডের মুভি বা সায়েন্স ফিকশনে আমরা অনেকেই দেখেছি মানুষকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করতে। এক্স ম্যান মুভিতে প্রফেসর জেভিয়ার একটি হেলমেট পরিধানের মাধ্যমে নিজের মস্তিষ্কের ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে পৃথিবীর সকল মিউটান্টদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারতেন। তবে এই কল্পবিজ্ঞানের গল্পটিকে সত্যিতে পরিণত করে দেখালো লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি এবং গোল্ডস্মিথস ইউনিভার্সিটির গবেষকরা।
মানব মস্তিষ্ক আজও বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্যের বিষয়। মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ মানব শরীরের বিভিন্ন কর্মকান্ড ও কর্মক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মস্তিষ্কের যে অংশটি মানুষের চিন্তাভাবনা ও স্মৃতিকে নিয়ন্ত্রন করে সেটি হলো ডিএলপিএফসি (dorsolateral prefrontal cortex)। এটি মানব মস্তিষ্কের সবচেয়ে সম্প্রতি বিবর্তিত অংশগুলির একটি। চিন্তাভাবনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় মস্তিষ্কের এই অংশটি সবচেয়ে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। বৈজ্ঞানিক তথ্য ভিত্তিক জার্নাল ‘সায়েন্টিফিক’ এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি এবং গোল্ডস্মিথস ইউনিভার্সিটির গবেষকরা মস্তিষ্কের এই অংশে মৃদু পরিমাণে বিদুৎ প্রেরণ করে পরীক্ষা করেন। পরীক্ষার ফলে তারা দেখতে পান যে, বিদ্যুৎ প্রেরণের ফলে সাবজেক্টিভ ব্যক্তিদের চিন্তা ও স্মরন শক্তির পরিবর্তন ও উন্নতি সাধিত হয়েছে।
কোন সমস্যায় পতিত হলে নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে সমাধান খুজে বের করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। ডিএলপিএফসি (dorsolateral prefrontal cortex) মূলত এই প্রক্রিয়াটিকেই সম্পাদন করে থাকে। কিন্তু যখন সমস্যাটা নতুন হয় তখন পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকার ফলে পূর্ব অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের সৃজনশীলতাকে বাধাগ্রস্থ করতে থাকে। এরকম পরিস্থিতির মোকাবেলা করার জন্য মস্তিষ্কে ওই অংশটির সাময়িক ভাবে যদি নিষ্ক্রিয় করা যায় তাহলে নতুন উদ্ভুত সমস্যার ক্ষেত্রে চিন্তা করা সহজতর হয়ে ওঠে। গবেষকরা যাটজন ব্যক্তির উপর পরীক্ষা চালান। পরীক্ষায় তারা দেখতে পান যে ডিএলপিএফসি (dorsolateral prefrontal cortex) এ মৃদু বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে সাবেজেক্টিভ ব্যক্তিরা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে কঠিন সমস্যার সমাধানে সক্ষম হয়ে উঠেছে।
মানুষ তার অদম্য ইচ্ছা ও পরিশ্রমের ফলে আজ উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করছে। কৃত্রিম ভাবে মেধার বিকাশ থেকে শুরু করে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স আজ আর কল্পনা নয়। আর এভাবেই বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর গল্পগুলো ভবিষ্যত মানুষের জন্য দৈনন্দিন সত্যতে পরিণত হবে।

শেয়ার করুন

0 comments: